Elements Of Design (এলিমেন্টস অফ ডিজাইন)

 

Elements Of Design (এলিমেন্টস অফ ডিজাইন)

এলিমেন্টস অফ ডিজাইন বলতে ডিজাইনের উপাদানগুলো বুঝায়। উপাদানগুলো ব্যবহার করে সুন্দর একটি ডিজাইন তৈরী করা যায়। ডিজাইনের মৌলিক বিষয়গুলি হলো ডিজাইনের উপাদান। ডিজাইনের উপাদানগুলো একত্রিত করা একটি ভিজ্যুয়াল চিত্র তৈরীর প্রথম পদক্ষেপ। যখন আমরা কোনও ডিজাইনের বিশেষ কোন অংশের দিকে তাকাই তখন আমাদের দৃষ্টি সে অংশটির দিকে তাকিয়ে থাকে। ডিজাইনের উপাদানগুলি সাজিয়ে আপনি খুব সহজেই ভিজ্যুয়াল চিত্র তৈরী করতে সক্ষম হন।

ডিজাইন মূলত একটি কাঠামোর মধ্যে তৈরী করা হয় যা মৌলিক উপাদানগুলির সমন্বয়ে গঠিত। ডিজাইনের মৌলিক উপাদানগুলো নিজেদের মাঝে যোগাযোগ তৈরী করে। এই উপাদানগুলি বিভিন্ন ব্লক তৈরী করে যা পূর্ণাঙ্গ ডিজাইন তৈরী করতে পারে। এই উপাদানগুলি যে উপায়ে সাজানো যায় আমরা তাকে ডিজাইনের নীতি বা প্রিন্সিপাস অফ ডিজাইন বলি। প্রিন্সিপালস অফ ডিজাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারন এগুলো মৌলিক কাঠামোগত উপাদানগুলিকে সংগঠিতভাবে সাজাতে সাহায্য করে।

ডিজাইনের উপাদানগুলি আপনার একটি ডিজাইন তৈরীর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান হিসাবে ভাবতে পারেন। প্রতিটি উপাদান একটি ভিজ্যুয়াল বার্তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এগুলির সংমিশ্রণটি ডিজাইনটি কীভাবে অনুধাবন করা যায় তার উপর প্রভাব ফেলে। আপনি কী তৈরী করতে চাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে আপনি এই উপাদানগুলি একে অপরের সাথে সংমিশ্রণে ব্যবহার করতে পারেন। ডিজাইনের ৬টি উপাদানগুলো নিচে আলোচনা করা হলো।

 


১) Line (রেখা): রেখা হলো একটানা চলমান বিন্দুর গতিপথ। 

রেখা (Line) হলো ডিজাইনের সবচেয়ে মৌলিক উপাদান, যা একটানা চলমান কোনো বিন্দুর গতিপথকে নির্দেশ করে। রেখার মাধ্যমে আকার (Shape) গঠিত হয় এবং ডিজাইনে দিকনির্দেশনা, গতি ও বিভাজন তৈরি করা যায়। রেখা শুধু আকার তৈরির জন্য নয়, বরং দর্শকের চোখকে একটি নির্দিষ্ট দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যও ব্যবহৃত হয়। রেখা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে—সোজা (Straight), বাঁকানো (Curved), আড়াআড়ি (Horizontal), লম্বালম্বি (Vertical), তির্যক (Diagonal), ভাঙা (Zigzag) অথবা জৈব (Organic)। প্রতিটি রেখার নিজস্ব ভিজ্যুয়াল অর্থ রয়েছে। যেমন, আড়াআড়ি রেখা শান্তি ও স্থিতি প্রকাশ করে, লম্বালম্বি রেখা শক্তি ও স্থায়িত্ব বোঝায়, আর তির্যক রেখা গতি ও উত্তেজনার ইঙ্গিত দেয়। গ্রাফিক ডিজাইনে রেখা ব্যবহার করা হয় বিভাজন তৈরি করতে, বর্ডার বা ফ্রেম বানাতে, টেক্সট বা অবজেক্টকে আলাদা করতে এবং দৃষ্টিনন্দন প্যাটার্ন গঠনে। ফলে বলা যায়, রেখা শুধু একটি সরল চিহ্ন নয়, বরং এটি ডিজাইনের ভিজ্যুয়াল ভাষার ভিত্তি, যা সৃজনশীল যোগাযোগ ও নান্দনিকতার জন্য অপরিহার্য। 

২) Shape (গঠন/আকৃতি): একটি আকৃতি একটি নিজস্ব অন্তর্ভুক্ত অঞ্চল। বর্গক্ষেত্র, বৃত্ত, মুক্ত আকৃতি অথবা প্রাকৃতিক আকার। একটি পজিটিভ আকৃতি স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি নেগেটিভ আকৃতি তৈরি করে। 

৩) Direction (দিকনির্দেশ): প্রতিটি লাইনের একটি দিক থাকে যেমন: অনুভূমিক (Horizontal), উল্লম্ব (Vertical) এবং তির্যক (Oblique)। 

৪) Size (আকার): একটি শেইপ থেকে অন্য একটি শেইপ এর এলাকার সম্পর্ককে বুঝায়। 
✍️ আকার (Size) এর সংজ্ঞা
আকার হলো কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতার সমন্বিত পরিমাপ। সহজভাবে বললে, একটি বস্তুর কত বড় বা ছোট সেটি বোঝাতে আকার ব্যবহৃত হয়।
💻 কম্পিউটার গ্রাফিক্সে আকার (Size): কম্পিউটার গ্রাফিক্সে Size বা আকার বলতে বোঝায়—  কোনো অবজেক্ট, ছবি, টেক্সট বা শেপের উচ্চতা (Height), প্রস্থ (Width) এবং কখনো গভীরতা (Depth)।এটি পিক্সেল, ইঞ্চি, সেন্টিমিটার বা পার্সেন্টেজে মাপা হয়। 👉 উদাহরণ:
একটি ছবির আকার: 1920 × 1080 px
একটি রেক্ট্যাঙ্গলের আকার: Width = 200 px, Height = 100 px 

৫) Texture (জমিন): কোনও আকারের পৃষ্ঠের গুণমান - যেমন: রুক্ষ, মসৃণ, নরম, শক্ত বা চকচকে বুঝায়। 

৬) Color (রঙ): রঙ হলো আলো প্রতিফলন, শোষণ ও বিকিরণের কারণে মানুষের চোখে দৃশ্যমান দৃশ্যগত অনুভূতি। সহজভাবে, রঙ হলো একটি আলোর বৈশিষ্ট্য যা নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে চোখে ধরা পড়ে এবং মস্তিষ্ক তা ব্যাখ্যা করে।
💻 কম্পিউটার গ্রাফিক্সে রঙ: কম্পিউটার গ্রাফিক্সে রঙ বলতে বোঝায়—
পিক্সেলের ভেতর আলো/ডিজিটাল সিগন্যালের সমন্বয় যা সাধারণত RGB (Red, Green, Blue) বা CMYK (Cyan, Magenta, Yellow, Key/Black) মডেলের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
RGB মডেল: স্ক্রিন বা মনিটরে ব্যবহৃত হয়, আলো ভিত্তিক (Additive Color System)।
CMYK মডেল: প্রিন্ট মিডিয়াতে ব্যবহৃত হয়, কালি ভিত্তিক (Subtractive Color System)।

অর্থাৎ, কম্পিউটার গ্রাফিক্সে রঙ মানে হলো—
একটি সাংখ্যিক মান (code বা value) যা ডিজিটাল পর্দায় বা প্রিন্টে দৃশ্যমান আলোর রূপ দেয়। 

7) Value (মান/উজ্জ্বলতা): ডিজাইনে Value হলো কোনো রঙ বা শেডের উজ্জ্বলতা ও অন্ধকারের মাত্রা। অর্থাৎ একটি রঙ কতটা হালকা (Light) বা গাঢ় (Dark), তা Value দ্বারা বোঝানো হয়। ডিজাইনে Value-এর সঠিক ব্যবহার একটি চিত্রকে গভীরতা, স্পষ্টতা এবং বাস্তবতা প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, কালো থেকে সাদা পর্যন্ত ধাপে ধাপে পরিবর্তন করা শেডগুলোই Value Scale। Value ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজাইনার আলো-আঁধারি তৈরি করতে পারেন, যা চিত্রে বাস্তবতার অনুভূতি এনে দেয়। এটি শুধু ভিজ্যুয়াল সৌন্দর্য নয়, বরং কোনো অবজেক্ট বা বিষয়কে চোখে পড়ার মতো গুরুত্ব (Emphasis) দিতে সাহায্য করে। একটি পোস্টারে ব্যাকগ্রাউন্ড যদি হালকা রঙের হয় এবং টেক্সট যদি গাঢ় Value-এর হয়, তাহলে লেখা সহজে পড়া যায়। ফলে Value হলো এমন একটি উপাদান, যা ডিজাইনে গভীরতা, কনট্রাস্ট এবং ভিজ্যুয়াল আকর্ষণ যোগ করে।

8) Form (রূপ/ত্রিমাত্রিকতা): Form হলো কোনো অবজেক্টের ত্রিমাত্রিক রূপ, যেখানে দৈর্ঘ্য (Length) ও প্রস্থ (Width)-এর সাথে গভীরতা (Depth) যুক্ত হয়। Form ডিজাইনে আকারকে বাস্তব ও জীবন্ত করে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, একটি সাধারণ বৃত্ত (Circle) হলো Shape, কিন্তু এটিকে আলো-ছায়া দিয়ে উপস্থাপন করলে সেটি গোলক (Sphere) রূপ নেয়, যা Form। একইভাবে, একটি বর্গক্ষেত্র (Square) কেবল Shape হলেও এর সাথে গভীরতা যোগ করলে সেটি ঘনক (Cube) হয়ে যায়। ডিজাইনে Form-এর ব্যবহার শিল্পকর্মকে বাস্তবতার কাছাকাছি নিয়ে যায় এবং দর্শকের মনে ভিজ্যুয়াল ইমপ্যাক্ট সৃষ্টি করে। গ্রাফিক্স ডিজাইনে 3D ইফেক্ট, ছায়া (Shadow), আলো (Highlight) এবং Perspective ব্যবহার করে Form তৈরি করা হয়। ফলে Form হলো সেই উপাদান, যা নকশায় ত্রিমাত্রিকতা, ভলিউম ও বাস্তবতার অনুভূতি এনে দেয়।


Comments